ঘাতকরা দয়া দেখায়নি অন্তঃসত্ত্বা সাইমনাকেও

ঘাতকরা দয়া দেখায়নি অন্তঃসত্ত্বা সাইমনাকেও

গুলশান হত্যাকাণ্ডের নির্মম শিকার হওয়ার সময় ইতালির বাসিন্দা সাইমনা মন্টি ছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ৩৩ বছর বয়সী সেই নারীকেও কুপিয়ে মেরেছে তরুণ ঘাতকরা। ইতালির সংবাদমাধ্যমজুড়ে মমতাময়ী সাইমনার জন্য এখন কেবলই হাহাকার।
ইতালির স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস সাইমনাকে নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখান থেকে জানা গেছে, দক্ষিণ ইতালির ছোট্ট শহর ম্যাগলিয়ানো স্যাবিনো থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ঢাকা এসেছিলেন সাইমনা। বেড়ানোর পর চলতি সপ্তাহেই দেশে ফেরার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তার আগে কয়েকজন ইতালীয় বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গত শুক্রবার রাতে ‘হলি আর্টিজান বেকারিতে’ গিয়েছিলেন তিনি।

ঘাতকরা দয়া দেখায়নি অন্তঃসত্ত্বা সাইমনাকেও

সাইমনার ভাই লুকা মন্টি স্থানীয় একটি গির্জার যাজক। বোনের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমার বোনের শহিদ হওয়া এবং আমার পরিবারের যন্ত্রণা বিশ্বভ্রাতৃত্বকে আরো শক্তিশালী করবে।’

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সাইমনার খবরে উপচে পড়ছে ইতালির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। রয়টার্স জানায়, ঢাকায় বসবাসকারী বিদেশিদের বড় অংশ ফ্যাশন এবং বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। শুক্রবার রাতে যে নয়জন ইতালীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রায় সবাই ছিলেন ফ্যাশন ডিজাইনার বা পোশাক ব্যবসায়ী।

বাংলাদেশের একটি ফ্যাশন ডিজাইনিং সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৫২ বছর বয়সি নাদিয়া বেনেদেত্তি। তাঁর ভাইয়ের মেয়ে জিউলিয়া আফ্রি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমাদের আর দেখা হবে না। ফ্যাশন নিয়ে আলোচনাও হবে না।… তবে ওদের (সন্ত্রাসবাদী) আর এমন হত্যালীলা চালাতে দেওয়া যাবে না। ওরা যেন জিততে না পারে। এজন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

ইতালির নেপলসের বাসিন্দা জিয়ান গ্যালিয়াজো বসেত্তি (৪৫) ঢাকার একটি পোশাক সংস্থার মালিক। পাঁচ বছর ধরে তিনি ঢাকায় থাকেন। তাঁর বোন জিহ্লা বলেছেন, ‘আমরা স্তম্ভিত!’ ঘটনার রাতে মোট ১০ জন ইতালীয় ওই রেস্তোরাঁয় ছিলেন। তাঁদের মধ্যে বেঁচে গিয়েছেন শুধু জিয়ান। তাঁর স্ত্রী ক্লদিয়া মারিয়া দিআন্তোনাকে নৃশংসভাবে জবাই করেছে হত্যাকারীরা।

গুলশনের সন্ত্রাসবাদী হামলায় মারা গেছেন সাতজন জাপানি নাগরিক। জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ এবং দুজন নারী। এ ছাড়া আরেক জাপানি নাগরিক গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, নিহত সাতজনের মধ্যে ছয়জনই ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরশু রাতে তাঁরা একসঙ্গেই খেতে গিয়েছিলেন ওই রেস্তোরাঁয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment